আমেরিকায় এখন নারীদের পক্ষ থেকে শুধু যৌন নিগ্রহের অভিযোগ।।
ছবিঃ ড্যান জনসন
[নারীরা সব এখানে ভার্জিন এবং সতী।]
নিউইয়র্ক থেকে ড. ওমর ফারুক সম্পাদিতঃ পাঁচ বছর আগে এক কিশোরীকে যৌন নিগ্রহের অভিযোগ উঠেছিল ড্যান জনসনের বিরুদ্ধে। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর সদস্য, কেন্টাকির রিপাবলিকান সেই নেতা ড্যান জনসন এ অভিযোগর পর নিজেকে ঠিক রাখতে পারেন নি। অবশেষে নিজেই নিজের জীবন শেষ করলেন। তিনি স্ত্রী ও সন্তানদের সামনে মুখ দেখাতে লজ্জা করলেন। তাছাড়া একজন জনপ্রিয় প্রতিনিধি হিসেবেও ভোটারদের কাছে তার রয়েছে দায়বদ্ধতা। অবশেষে তিনি মারা গিয়েছেন। তিনি আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই সন্দেহ। কেন্টাকির বুল্লিট কাউন্টির মাউন্ট ওয়াশিংটনের কাছে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে। দেহে ছিল একটা গুলির আঘাত। পড়ে ছিল ৪০ ক্যালিবারের সেমি অটোম্যাটিক হ্যান্ডগানও।
পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, ড্যান লুইসভিলের দক্ষিণপূর্বের একটি এলাকায় গিয়েছিলেন গাড়ি চালিয়ে। তারপর সেখানে গাড়ি পার্ক করেন। গাড়ির সামনেই গুলি চালিয়ে আত্মঘাতী হন। তার কিছুক্ষণ আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় দীর্ঘ এবং খাপছাড়া এক বার্তায় জানান, তিনি যৌন নিগ্রহ করেন নি। পরিবারের বাকিদের বলেন, তাঁর স্ত্রীর পাশে থাকতে। এই পোস্ট দেখেই আত্মীয়রা উদ্বিগ্ন হয়ে পুলিশকে জানান। সেই খবরে পুলিশ খোঁজ শুরু করে তাঁর দেহ উদ্ধার করে।
ড্যানের বিরুদ্ধে অভিযোগকারিণী মারান্ডা রিচমন্ড এখন ২১-এর তরুণী। তাঁর দাবি, ২০১৩-র নতুন বছর শুরুর দিনে ওই ঘটনা ঘটে। তাঁর বয়স তখন ১৭। লুইসভিলের হার্ট অব ফায়ার চার্চের আশপাশে সে সময় থাকতেন মারান্ডা। জনসন ওই এলাকায় প্যাস্টর ছিলেন। মারান্ডার অভিযোগ, মদ্যপ অবস্থায় জনসন তাঁকে চুমু খাওয়ার চেষ্টা করেন। জামার তলায় হাতও দিতে গিয়েছিলেন। লুইসভিল মেট্রো পুলিশ বিভাগ অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করলেও জনসনের বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আগেই তা বন্ধ করে দেয়। পরে সেই অভিযোগ যায় কেন্টাকি সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং-এর হাতে। তারা ফের মারান্ডাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত সোমবার তারা তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে। তার পরদিনই অভিযোগ অস্বীকার করেন ড্যান। তাঁর বক্তব্য ছিল, বিরোধীরাই উস্কেছে মারান্ডাকে।
ড্যানের কথায়, ‘‘এমন অভিযোগ এই প্রথম শুনলাম।’’ তিনি সাংবাদিক বৈঠকও ডাকেন। পরে ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘‘ঈশ্বরই শুধু সত্যিটা জানেন। ওরা যে ভাবে দেখাচ্ছে, ব্যাপারটা তা একেবারেই নয়। আমেরিকা এ ধরনের ভুয়ো খবর বিশ্বাস করে না। আমি ঈশ্বরকে ভালবাসি, আমার স্ত্রীকে ভালবাসি। ও বিশ্বের শ্রেষ্ঠ স্ত্রী। ৯/১১-র নিহতদের শেষকৃত্যে অনেক সাহায্য করেছি। আর এ সব নিতে পারছি না।’’ খেই হারানো এই পোস্ট থেকেই খোঁজ শুরু হয় তাঁর।
শুধু যৌন নিগ্রহ নয়, এর আগে আরও একটি কারণে শিরোনামে এসেছেন জনসন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং প্রাক্তন ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামাকে তিনি ফেসবুক পোস্টে বাঁদরের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। বিতর্কিত ওই পোস্ট সত্ত্বেও কেন্টাকিতে ডিস্ট্রিক্ট স্টেট হাউস-এ ভোটের লড়াইয়ে জিতে যান। বিতর্ক শুরু হতেই তিনি তখন বলেছিলেন ‘আমাকে লড়াই থেকে সরিয়ে দিন!’’ শেষমেশ ভোটে জেতেন তিনিই। তাঁর মৃত্যুতে শোকবার্তা জানিয়েছেন রিপাবলিকান প্রতিনিধিরা।
আমেরকাতে এখন নারীরা একে একে অনেক জনপ্রতিনিধিসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী ও ধনী ব্যবসায়ী, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, চলচ্ছিত্র শিল্পে কীর্তিমান ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একের পর এক যৌন নিগ্রহের অভিযোগ করে যাচ্ছেন। আর বিপাকে পড়ছেন এসব সেলিব্রিটিরা।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, এসব নারীদের সম্মতিতেই যৌন কার্যক্রম সংঘটিত হয়ে থাকছে। যেমন চলচ্চিত্র বা মিডিয়ায় অবস্থান তৈরি করে নিতে হবে, তখন মিডিয়া মোগলকে খোশ রাখতে গিয়ে নারী যা করা দরকার সবই করে থাকবে। এখন ত্রিশ বছর পর, বিশ বছর পর তার বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দিচ্ছে। এসব নারীদের ওপর যৌন নিগ্রহর অভিযোগ সম্পর্কে আমি কথা বলেছিলাম মানবাধিকার কর্মী এবং আমার ডেইলি ঢাকা পোস্ট পোর্টালে কর্মরত Shirley Chesney এর সাথে। তিনি আমাকে জানালেন, এসব নারী নিজেরা ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজেদের পুরুষের কাছে সমর্পণ না করলে কোনভাবে এরকম যৌন কার্য সম্পাদিত হতে পারে না। তিনি আরও সুন্দর করে বলেন, প্রথমে নারী লোভী পুরুষ এমন এক পরিস্থিতি তৈরি করে বা কখনও একটু জোর জবরদস্তিও করে, নারী তখন নিজেই এক পর্যায়ে সে পুরুষের কাছে সমর্পিত হয়। এ সব নারী সুবিধা আদায়ের জন্য এরকম মামলাগুলো দিচ্ছেন বলেও অভিমত তার। কিশোরী মেয়েরা যে সব যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করে, বেশির ভাগই ভিত্তিহীন বলেছে নিউইয়র্ক পোস্ট পরিচালিত একটা সমীক্ষা। এতে বলা হয়, কিশোরীরা বয়ফ্রেন্ডের সাথে নিজের সম্মতিতেই যৌন ইচ্ছা পূরণ করে। কিন্তু পরবর্তীতে যখন প্রেগনেন্ট হয়ে যায়, বা কোন ভাবে পরিবারে বাবামা য়ের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যায়, তখন তারা অনেক সময়ই যৌন নিপীড়নের গল্প তৈরি করে।