অসুস্থ মা’কে ছাদ থেকে ফেলে খুন করল কলেজেরই এক মাস্টার।
নিউইয়র্ক থেকে ড. ওমর ফারুক।। স্থানীয় সময়ঃ ৫ জানুয়ারি ২০১৮ সন্ধ্যা ছয়টা। বাদ এশা।
নিজের মাকে ছাদ থেকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে খুন করল সন্দীপ নাথওয়ানি এক ভারতীয় । পরে মায়ের মৃত্যু দুর্ঘটনা বা আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টাতেও তিনি তৎপর ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা মিলল না।
রাজকোট পুলিশ গতকাল, ৪ জানুয়ারি ২০১৮, জানিয়েছে, জেরার মুখে অবশেষে নিজের মাকে খুন করার কথা স্বীকার করেছে সন্দীপ নাথওয়ানি ।সন্দীপ পেশায় একটি কলেজের মাস্টার। তিনি স্থানীয় একটি ফার্মেসি কলেজের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর। বয়স ৩৬। এ রকম অবিশ্বাস্য ও নির্দয় ঘটনাটি ঘটেছে গত ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। সন্দীপের মা, ৬৪ বছর বয়সি জয়শ্রীবেন, বেশ কিছুদিন অসুস্থ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর সন্দীপ নাথওয়ানি পরিবার দাবি করে, মাথার অসুখে ভুগছিলেন বৃদ্ধা। ছাদে উঠে টাল সামলাতে না পেরে পড়ে যান। কিংবা আত্মহত্যাও করে থাকতে পারেন।
কিন্তু এক বেনামি চিঠিতে তদন্তের মোড় ঘুরে যায়। চিঠিতে নাথওয়ানিদের বাড়ির সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখার পরামর্শ ছিল। এলাকার ডিসিপি করঞ্জরাজ বাঘেলা জানিয়েছেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে, সন্দীপই ধরে ধরে মাকে ছাদে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু নামল একা। কিছুপরই একজন ছুটে এসে তাকে বৃদ্ধার ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার খবর দেন। সন্দীপ এমন ভাণ করছে যেন কিছুই জানে না।’’
পুলিশের দাবি, প্রথমে সন্দীপ খুনের কথা কিছুতেই স্বীকার করে নি। জানিয়েছিল, মা প্রার্থনা করবেন, তাই সে তাঁকে ছাদে নিয়ে গিয়েছিল। মা তাকে জল আনতে বলায় নিচে নামে সে। তাই তাঁর পড়ে যাওয়ার কথা জানতেই পারে নি। কিন্তু সাক্ষ্য-প্রমাণ সবই ধীরে ধীরে সন্দীপের বিরুদ্ধে যেতে থাকে। ছাদ থেকে সে মায়ের চটি পরে সে দিন কেন নেমেছিল, তার উত্তর দিতে পারে নি সন্দীপ। বাঘেলার কথায়, ‘‘বৃদ্ধা কিছুদিন ধরে মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণের সমস্যায় ভুগছিলেন। শৌচালয় যেতেও সাহায্যের প্রয়োজন হচ্ছিল। সব দিক খতিয়ে দেখে আমাদের সন্দেহ বাড়ে।’’
বাঘেলা জানান, জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সন্দীপ। অবশেষে স্বীকার করে বলে যে, মায়ের অসুখ নিয়ে সে ও তার স্ত্রী মাত্রাতিরিক্ত চিন্তিত হয়ে পড়ছিল। ছোট বোনের বিয়ে দেওয়া নিয়েও পরিবারে অশান্তি লেগেছিল। তাই নিজের মাকে সে নিজেই ধাক্কা দিয়ে মেরে ফেলেছে। জেরা চলার সময় অসুস্থ বোধ করায় সন্দীপকে হাসপাতালে ভর্তি করান হয়েছে। তার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেই গ্রেফতার করা হবে ঘাতককে।