অভিনব শাস্তি।। গ্রামের প্রধানের বাড়িতে প্রবেশের অপরাধে বৃদ্ধকে চাটতে হল থুতু।
নিউইয়র্ক থেকে ড. ওমর ফারুক। তারিখঃ ১৯ অক্টোবর ২০১৭। সময়ঃ রাত নয়টা।
গ্রামের প্রধানের বাড়িতে হঠাৎ করে ঢুকে পড়েছিলেন উক্ত গ্রামেরই এক বৃদ্ধ। প্রবেশের জন্য যে অনুমতি নিতে হয়, সে জ্ঞানটাও যে লোকটির একদমই জানা ছিল না। আর যায় কোথায়! এ যে মহাঅপরাধ। অনমুতি না নিয়েই গ্রামের প্রধানের বাড়িতে ঢুকে পড়া। এই মহা অপরাধের শাস্তির জন্য মাটিতে থুতু ফেলে সেই থুথুই চাটতে হল উক্ত বৃদ্ধকে।
উদ্ভট এ ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের নালন্দা জেলার নুরসরাই ব্লকের অজয়পুর গ্রামে। এই জেলাতেই এক সময় থাকতেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে জানা যায়, সরকারি প্রকল্পের বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য গ্রামের প্রধান, স্থানীয় ভাষায় সরপঞ্চ, -এর বাড়িতে গিয়েছিলেন ওই বৃদ্ধ। কোন প্রকারের অনুমতি ছাড়াই সেই বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন তিনি। গ্রামের অতি সাধারণ একজন মানুষের কি করে ধৃষ্টতা হয় কি করে কাউকে কিছু না বলে সরপঞ্চের বাড়িতে ঢুকে পরতে পারে! সরপঞ্চ মানে তো সমগ্র গ্রামের মাথা। ইংরেজিতে যাকে বলি ‘হড অব দ্যা ভিলেজ’। সেই বাড়িতে বিনা অনুমতিতে ঢুকে পড়ার খেসারত দিতে হয়েছে সে বৃদ্ধকে এভাবেই! এই অপরাধের কারণে মাটিতে থুতু ফেলে তা চাটতে বাধ্য করা হল ওই বৃদ্ধকে।
ছবিতে দেখা গিয়েছে যে, যেখানে থুতু ফেলে তা ওই বৃদ্ধকে চাটানো হয়েছে, সেই জায়গায় রয়েছে বেশ কয়েক জোড়া জুতোও আছে। সরপঞ্চের বাড়ির লোকেদের জুতো রাখার জায়গায় থুতু ফেলে চাটতে বাধ্য করা হয়েছে তাঁকে। এখানেই অবশ্য শেষ হয়ে যায় নি তার পাপের শাস্তি। বিনা অনুমতিতে সরপঞ্চের বাড়িতে ঢুকে পড়েছে বলে কথা! একটি ভিডিও-তে দেখা গিয়েছে সরপঞ্চের বাড়িতেই দুই মহিলা অই বৃদ্ধকে জুতো দিয়ে বেধড়ক মারছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই উঠেছে সমালোচনার ঝড়। বর্তমান সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়তেও খুব একটা সময় নেয়নি। সুশাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কেন্দ্রে সরকার গঠন করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি। মাস খানেক আগে সেই গেরুয়া শিবিরই জোট বেঁধে সরকার গঠন করেছে বিহারে। স্বভাবতই এই ঘটনার জেরে অস্বস্তিতে পড়েছে বিহার প্রশাসন। যদিও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ওই রাজ্যের মন্ত্রী নন্দ কিশোর যাদব। বিহারের মন্ত্রীসভার ক্যাবিনেট মন্ত্রী নন্দ কিশোর বলেছেন, “এ ধরনের ঘটনা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
[ভারতীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত নিউজ অবলম্বনে।]