ধারাবাহিক উপন্যাস।
।।ইবলিশ জননীর মহড়া।। ড ওমর ফারুক
[স্ত্রীর প্রতি স্বামী বা নারীর প্রতি পরিবারের পুরুষ সদস্যদের কর্তব্য এবং আদি পিতা ও সর্বযুগের সেরা সুন্দরী রমণী ‘মা হাওয়া’ প্রসঙ্গ।]
লেখা আরম্ভ তারিখ: ২০ অক্টোবর ২০১৯
মধ্যরাত।। নির্বাচনের দিনের পূর্ব রাতের ভোট গ্রহণের সময়কাল।
এবার উপন্যাস লেখার কাজ শুরু করলাম। পর্বগুলো ছোট ছোট করে হবে। প্রথম পর্ব শেষ হল। অবশ্য পরবর্তীতে সংশোধন, সম্পাদনা ও পরিমার্জনা হবে। বাংলাদেশ থেকে ইবলিশ ছুটি নিয়ে নিরুদ্দেশ আছে। তিনি হয়ত ভেবেছেন, তার জননীই স্বয়ং দেশব্যাপী মহড়া দিচ্ছে। তিনি অন্যদিকে এখন সময় দেবেন মনে করে আমেরিকা, রাশিয়া, চীন, তুরস্ক, ইরান, সিরিয়া, কোরীয় উপদ্বীপ এলাকা ইত্যাদি ভূখণ্ডে তার অন্য অনুগামী ও শিষ্যদের নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাবেন। জননী’কে ‘ব দ্বীপ’ এলাকার দায়িত্ব সঁপে দিলেন।
শুরু যেভাবে হল, এ দায়িত্ব বন্টন।
প্রথম পর্ব।।
সৃষ্টির আদিতে মানবীই ত ভুল করে গন্ধম ফল খেয়েছিল। আদি মানবের রেহাই মিলে নি মহান স্রষ্টার কাছে! স্রষ্টা বললেন, তুমি কেন তোমার মানবী’র প্রতি নজরদারি রাখ নি! এখন দু’জনই নেমে যাও জান্নাতের এ বালাখানা থেকে। ঘুরে এস দুনিয়া। এবং অবশেষে ফিরে আসবে আমারই কাছে। তোমাদের যাত্রা শুরু জান্নাতের এ সুরম্য বাগিচা আর বালাখানা থেকে। আবার ফিরে আসবে আমারই কাছে। সোজা কথায়, এ জার্নি ফ্রম আল্লাহ টু আল্লাহ।’ কিন্তু মনে রাখবে, যে ইবলিশ তোমার এ বিশ্বের সর্ব যুগের সকল সুন্দরী রমণীদের সেরা সুন্দরী ‘হাওয়া বিবি’কে প্রলোভনে ফেলে আজ তোমাকে রুপসী নারীসহ এ বেহেশতের আরামের জায়গা থেকে বিতাড়িত করল, সে ইবলিশ আমার অভিশপ্ত শয়তান। শতকের পর শতক, আরও শতক, আরও বেশ ক’হাজার বছরের এবাদতও তার কাজে আসে নি, শুধু আল্লাহর একটি কথার অবাধ্য হয়েছিল বলেই কিন্তু । সে ইবলিশ এখন আমি কর্তৃক বিতাড়িত শয়তান। অভিশপ্ত এ ইবলিশ কিন্তু পৃথিবীর জীবনে তুমি, তোমার সুন্দরী স্ত্রী হাওয়া বিবি এবং তোমার নিযুত নিযুত অজস্র সন্তানদের এভাবে বিপথগামী করতে সর্বদাই প্রয়াসী হবে, খুবই তৎপর হবে তোমাদের ভুলপথে পরিচালিত করে বিপথগামী করে দিতে। পৃথিবীর জীবনে একটুও স্বস্তি দেবে না তোমাকে, তোমার রমণী এবং সন্তানদের।
আদি পিতা: [অত্যন্ত বিণয়ের সাথে কান্না বিজড়িত কণ্ঠে] হে আরশের মালিক, মহান প্রভু, মহান স্রষ্টা ও প্রতিপালক, আমার স্ত্রী না হয় অপরাধ করেছে, কিন্তু আমি কি করলাম, একটু যদি আপনার গোলামকে বলে দেন, অপরাধের কথা।
মহান আল্লাহ: [মৃদু হেসে] তুমি বুঝি অপরাধ কর নি? তোমাকে আমি সৃষ্টির সেরা মাখলুকাত করে পয়দা করেছি। তুমিই হলে প্রথম মানব। তোমাকে সকল মাখলুকাতের চেয়েও বেশি মর্যাদায় অভিষিক্ত করলাম, জ্ঞান বিজ্ঞানে তোমাকে বিচক্ষণ করলাম। তুমি এতক্ষণেও বুঝি তোমার অপরাধ টের পাও নি!
আদি পিতা: [কান্না বিজড়িত কণ্ঠে] না প্রভু, আপনি আমাকে যা করেছেন, সেজন্য আমি শুকর গুজার করি, আমি এবং আমার স্ত্রী বেহেশতে আপনার নিষেধ না মেনে গন্ধম ফল খেয়ে যে অবাধ্য আচরণ করেছি, তার জন্য ক্ষমা চাই। তবুও প্রভু আমাকে একটু খুলেই বলুন, নারী অপরাধ করলে পুরুষকে সে ফল ভোগ করতে হবে কেন! আপনার কাছ থেকে আমি জ্ঞান লাভ করে তা আমার সন্তানদের শেখাতে পারব। তারা সতর্ক হবে।
মহান আল্লাহ: হ্যাঁ আদম, নারী ত আমি সৃষ্টি করেছিলাম, তুমি নিষঙ্গতা বোধ করে করে কেমন জানি নির্মোহ হয়ে গিয়েছিলে। তোমার মাঝে আমি হতাশার ভাব লক্ষ্য করলাম। ফেরেশতাকুলও আমাকে বারবার বলতে লাগল, ‘হে রাব্বুল আ’লামীন। আপনি ত অনেক শখ করে আদম সৃষ্টি করেছেন। আমরা কখনই আপনার বন্দেগি ছাডা আপনার কোন আদেশ মেনে নিতে অবাধ্য হই না। তারপরও আপনি আমাদের চেয়েও সেরা মানব তৈরি করলেন। আমরা জানি, আপনি সর্ব বিষয়ে অভিজ্ঞ। আমরা ত শুধু সেটুকু জানি, যেটুকু আপনি আপন অনুগ্রহে আমাদের জানতে দেন। হে প্রভু, আপনার প্রিয় আদম ত নিসঙ্তা বোধ করছে এবং বেহেশতের এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় পায়চারী করে করে শুধু আপনার জিকির করছে। তিনি নহরের পাশে পায়চারী করতে করতে কি যেন তার মনের ভেতর অপ্রাপ্তির হাহাকার করছে ফিরছে।’
আমি তখন তোমার নিসঙ্গতা দূর করে দিয়ে তোমার হৃদয়ের শীতল করে দেবার জন্য হাওয়া বিবি’কে সৃষ্টি করলাম। (অসমাপ্ত)